Skip to main content

Blog entry by Belen Valdivia

জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID সংশোধন করার নিয়ম

জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID সংশোধন করার নিয়ম

কিভাবে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন (NID Address Change songsodhon) করবেন, বিভিন্ন ধরণের ভুলের জন্য কি কি প্রমানপত্র দেয়া লাগবে এবং কিভাবে আপনার কম্পিউটার বা আপনার মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম পূরণ করবেন তা দেখিয়ে দিব।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন

আমাদের প্রায় সবারই জাতীয় পরিচয়পত্রে বিভিন্ন ধরণের ভুল রয়েছে। কারো নামের ভুল, পিতা মাতার নামের ভুল, জন্মতারিখ, ঠিকানার ভুল ইত্যাদি। কিন্তু অনেকেই জানেন না, অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের বিশেষ সুযোগ রয়েছে।

ঘরে বসেই যথাযথ প্রমাণসহ অনলাইনে আবেদন করে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারবেন।

ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন নিয়ে যে কোন প্রশ্ন করতে বা উত্তর পেতে কমেন্ট করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে জেনে নিন। জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের দিকে যে তথ্যসমূহ রয়েছে যেমন,

নাম

পিতার নাম

মাতার নাম ও

জন্মতারিখ

ইত্যাদি সংশোধন এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত। এ তথ্যগুলোর যে কোন একটি বা সবগুলো একসাথে পরিবর্তনের জন্য একই পরিমাণ ফি দিতে হবে।

নাম সংশোধন

নাম সংশোধনের জন্য বেশি গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র হচ্ছে এসএসসি, এইচএসসি বা সমমানের সনদ (SSC and HSC Certificate)

যদি কারো এসএসসি সনদ না থাকে এক্ষেত্রে নিম্মোক্ত ডকুমেন্ট গুলোর যে কোন ১ টি বা ২ টি বা সবগুলো  সাবমিট করতে পারেন।

নাম সংশোধনের জন্য যে প্রমাণপত্রগুলো প্রয়োজনঃ (যেকোন ১টি)

এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সনদ

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ

পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স

এমপিওসিট/সার্ভিস বহি

বিবাহের কাবিন নামা

পিতা ও মাতার নাম সংশোধন

পিতা ও মাতার নাম সংশোধনের জন্য এসএসসি, এইচএসসি বা সমমানের সনদ (SSC and HSC Certificate) এবং একই সাথে পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের কপি দাখিল করতে হয়।

পিতা-মাতার নাম সংশোধনের জন্য যে প্রমাণপত্রগুলো প্রয়োজনঃ

এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সনদ, অথবা

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, অথবা

পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স

এবং নিম্মোক্ত যে কোন ১ টি

পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র

পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন

চাকুরীজীবিদের ক্ষেত্রে অফিস প্রধানের প্রত্যয়ন

পিতার সকল সন্তানদের জন্মের ক্রম অনুযায়ী নাম ও জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর উল্লেখ পূর্বক ওয়ারিশন সনদ/প্রত্যয়ন পত্র

ভাই-বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র

ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন

ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র হচ্ছে এসএসসি (SSC Certificate)

যদি কারো এসএসসি সনদ না থাকে এক্ষেত্রে নিম্মোক্ত ডকুমেন্ট গুলোর যে কোন ১ টি বা ২ টি বা সবগুলো  সাবমিট করতে পারেন।

জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য যে প্রমাণপত্রগুলো প্রয়োজনঃ (যেকোন ১টি)

এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সনদ

পাসপোর্ট

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন

ড্রাইভিং লাইসেন্স

আবেদন ফি- ২৩০ টাকা (ভ্যাটসহ)

জাতীয় পরিচয় পত্রের অন্যান্য তথ্য সংশোধন

এন আই ডি সংশোধন

জাতীয় পরিচয় পত্রের অন্যান্য তথ্যের মধ্যে রয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, মোবাইল নম্বর, ধর্ম, ঠিকানা ইত্যাদি।

আবেদন ফি- ১১৫ টাকা (ভ্যাটসহ)

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়না। এ জন্য আপনাকে একটি ঠিকানা পরিবর্তন ফরম পূরণ করে আপনার সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।

আসুন এবার জানি, কিভাবে কম্পিউটার বা মোবাইল দিয়ে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আবেদন করবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি

সংশোধনের ধরণ

ফি’র পরিমাণ

এনআইডির তথ্য সংশোধন – NID Info Correction

২৩০ টাকা

অন্যান্য তথ্য সংশোধন – Other Info Correction

১১৫ টাকা

উভয় তথ্য সংশোধন – Both Info Correction

৩৪৫ টাকা

রিইস্যু – Duplicate Regular

৩৪৫ টাকা

রিইস্যু জরুরী – Duplicate Urgent

৫৭৫ টাকা

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি

অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম

প্রথমে জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইটে আপনার NID নম্বর, জন্মতারিখ ও ঠিকানা দিয়ে আপনার একাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন করবেন। এরপর, আপনার একাউন্টে লগ ইন করে, আপনার প্রোফাইল থেকে ভুল তথ্য গুলো এডিট করবেন। ভুল তথ্য সংশোধনের ধরণ অনুযায়ী NID Service Fee প্রদান করবেন। সবশেষে আপনার সঠিক তথ্যের প্রমাণ হিসেবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রাদি স্ক্যান করে আপলোড করবেন এবং আবেদন সাবমিট করবেন।

কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইটে একাউন্ট রেজিষ্টার করবেন ?

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য নিম্মোক্ত ধাপগুলো আপনাকে অনুসরণ করতে হবে।

ধাপ ১: ডকুমেন্টসগুলোর স্ক্যান/ ছবি নেয়া

NID সংশোধনের আবেদন করার পূর্বে আপনার সংশোধনের ধরন অনুযায়ী, প্রমাণপত্রগুলো স্ক্যান করে সেইভ করে নিন।। কম্পিউটার ও স্ক্যানার থাকলে খুবই ভাল। না থাকলে মোবাইলে ভাল আলোতে, সোজাসুজি ভাবে ছবি তুলে নিন। ছবিটি সুন্দরভাবে ক্রপ করে নিন এবং প্রয়োজন হলে Brightness ও Contrast বাড়িয়ে নিন।

ডকুমেন্টের স্ক্যানড কপি বা ছবিগুলো আপনার কম্পিউটারের কোন নির্দিষ্ট ফোল্ডার বা মোবাইলের গ্যালারিতে রাখুন।

ধাপ ২: NID ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন

এবার কম্পিউটার থেকে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় পত্র উইং ওয়েবসাইটে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের একাউন্টে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।

রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া আগে সহজ ছিল, বর্তমানে ফেইস ভেরিফিকেশন করতে হয়। ফেইস ভেরিফিকেশনের জন্য আপনাকে নির্বাচন কমিশনের মোবাইল এপ ইনস্টল করতে হবে। নিচের লিংকে প্রক্রিয়াটি দেখতে পারেন।

ধাপ ৩: তথ্য সংশোধন

সফলভাবে রেজিষ্ট্রেশন করা হলে, আপনি NID একাউন্টে লগ ইন করবেন। তখন, আপনার সামনে নিচের মত একটি পেইজ আসবে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

এখানে ৩ ধরণের তথ্য রয়েছে, ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা। ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন করার জন্য, উপরের ডান পাশে নীল রংয়ের এডিট বাটনে ক্লিক করবেন। তারপর নিচের মত পেইজ আসবে। এখানে আপনি তথ্যগুলো পুনরায় টাইপ করে এডিট করার অপশন পাবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করুন। এভাবে আপনার ভুল তথ্যগুলো প্রমাণপত্রের সাথে মিল রেখে সঠিকভাবে টাইপ করুন।

তারপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার সংশোধন করা তথ্যের পূর্বরুপ ও সংশোধিত রুপ দেখতে পাবেন। সব ঠিক থাকলে আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন

ধাপ ৪: ফি প্রদান

এখন, আপনাকে আপনার ভুল তথ্যের ধরণ অনুযায়ী ফি প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলের এতক্ষণ যা করেছেন তা ক্লোজ করবেন না।

ফি প্রদান করেই আপনাকে আবার আবেদনের বাকি কাজ শেষ করতে হবে।

আপনি, রকেট, বিকাশ, ওকে ওয়ালেট থেকে খুব সহজেই NID Fee পরিশোধ করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দেওয়ার নিয়ম

তথ্য সংশোধনের জন্য প্রথমবার আবেদনের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা ফি এবং ১৫% ভ্যাট ৩০ টাকা, মোট ২৩০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।

যেহেতু বিকাশ অধিক ব্যবহৃত, হয়তো আপনার ও বিকাশ একাউন্ট রয়েছে। দেখুন কিভাবে বিকাশ হতে জাতীয় পরিচয় পত্র ফি পরিশোধ করবেন।

বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্রের (NID Fee) প্রদান

বিকাশের মাধ্যমে ফি দিতে বিকাশ এ্যাপ থেকে আপনার বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন। এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

পে বিল অপশনে যান

সরকারি ফি অপশনে ক্লিক করুন এবং NID Service অপশনটি বাছাই করুন।

আপনার আইডি নম্বরটি ইংরেজিতে লিখুন

আপনার আবেদনের ধরণ বাছাই করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্র ফি

NID Fee

এরপর আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর দিয়ে ফি পরিশোধ করুন। ফি পরিশোধ করা হলে আপনি জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইটে আবার ফিরে যান এবং প্রমাণপত্রসমূহ আপলোড করে আবেদনটি সাবমিট করুন।

ধাপ ৫: প্রমাণপত্র / ডকুমেন্ট আপলোড ও আবেদন সাবমিট

আপনাকে ১ম ধাপেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো স্ক্যান বা ছবি তুলে একটি ফোল্ডারে রাখার জন্য বলেছিলাম। এখন প্রয়োজন মোতাবেক আপনার ডকুমেন্ট গুলো আপলোড করে আবেদন সাবমিট করতে পারবেন।

ধাপ ৬: জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড

আবেদন সাবমিট করার পর, ড্যাশবোর্ডে ফিরে আসুন। উপরের দিকে আবেদনটি ডাউনলোড করার একটি লিংক দেখতে পাবেন। লিংকে ক্লিক করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন জটিলতা

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনে কিছু জটিলতা হতে পারে যদি আপনার কাছে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র না থাকে। কারণ প্রমাণপত্র ছাড়া ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা যাবে না।

তাছাড়া, প্রমাণপত্র হিসেবে দেওয়া আপনার ডকুমেন্টগুলোতেও শুদ্ধভাবে আপনার তথ্য থাকতে হবে। যেমন ধরুন, আপনার এনআইডিতে নাম- মোঃ কামাল উদ্দিন। কিন্তু আপনি চান আপনার শুদ্ধ নাম মোঃ কামাল হোসেন।

এক্ষেত্রে আপনার প্রমাণ হিসেবে দেওয়া কাগজপত্রে অবশ্যই- মোঃ কামাল হোসেন থাকতে হবে। যদি সেখানে, কামাল হোসেন বা মোঃ কামাল থাকে সেক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর

ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধনের জন্য সাধারণত প্রয়োজন এসএসসি সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট। এগুলোর না থাকলে, জন্ম নিবন্ধন, সরকারী চাকুরির সার্ভিস বইয়ের কপি, বিয়ের কাবিন ইত্যাদিও দেয়া যায়।

কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করা যায়?

জাতীয় পরিচয় পত্রের যে কোন ভুল সংশোধনের জন্য উপযুক্ত প্রমান আপলোড করে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনটি কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করলে অনলাইন থেকে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কত দিন লাগে?

সাধারণত অনলাইনে উপযুক্ত প্রমাণপত্র আপলোড করে সঠিকভাবে আবেদন করার পর ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোন ভেরিফিকেশনের জন্য ৫-১০ দিন দেরি হতে পারে।

 

অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধনের জন্য পড়ুন ঃ

নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র বা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার অনলাইন পদ্ধতি

 

নিজে নিজে ঘরে বসে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন করতে পড়ুন ঃ

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন

  • Share